ঘি এর ব্যবহার
ঘি ভারতীয় উপমহাদেশে উদ্ভূত হওয়া পরিশোধিত মাখন। খাবারের স্বাদ- গন্ধ বৃদ্ধিতে ঘি এই অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী রান্নায়
বহুদিন ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।এটি দুগ্ধজাত খাবার। ঘি নাম শুনলেই যেন মনটা ভরে যায়। গরম ভাতে একটু ঘি হলেই যেন পুরো ভাতটা নিমিষেই খাওয়া হয়ে যায়।ভাতের সঙ্গে ঘি মিশিয়ে খেলে শরীরে দীর্ঘক্ষণ শক্তি থাকে। ঘি এর ব্যবহার সেই প্রাচীনকাল থেকেই চলে আসছে। বিশেষ কিছু খাবারের স্বাদ বাড়াতে যেমন কাচ্চি বিরিয়ানীসহ আরো অন্যান্য খাবার তৈরিতে ঘিয়ের প্রয়োজন হয়। ঘি খেতে তো অনেকেই পছন্দ করেন আবার অনেকেই অপছন্দ করেন। কিন্তু অনেকেই জানেন না ঘিয়ের উপকারিতা সম্পর্কে। ঘি তখনই শরীরের ক্ষতি করে, যখন তা অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া হয়। তাই ঘিয়ের উপকারিতা পাওয়ার জন্য নিয়ন্ত্রণ মেনে ঘি খেতে হবে। এটি শুধু খাবারে ব্যবহার ছাড়াও রূপচর্চা ও পসিটিভিটি বাড়ানোর কাজে ব্যবহার হয়। প্রতিদিন অল্প পরিমানে খেয়েই দেখুন দেখবেন আপনার মস্তিস্ক আপনার হাতে। আপনি রাগ করছেননা আর জিনিস ও ভাঙছেন না আগের মতো।
ঘি এর পুষ্টিগুণ
ঘি’য়ের স্বাদ ও সুন্দর গন্ধ রয়েছে। অধিকাংশ দুগ্ধজাত দ্রব্যের মতো ঘি থেকে অ্যালার্জি হওয়ার আশঙ্কা নেই বললেই চলে। এক টেবিল চামচ (১৫ গ্রাম) ঘিয়ে প্রায় ১৩৫ কিলো ক্যালরি শক্তি, ৯ গ্রাম স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং ৪৫ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল উপস্থিত থাকে।
ঘিয়ের মূল উপাদান চর্বি হলেও ঘিয়ে ভালো মাত্রায় রয়েছে ভিটামিন ‘এ’, ভিটামিন ‘ই’ ও ভিটামিন ‘ডি’। অনেকে মনে করেন, চর্বি বা ফ্যাট শরীরের জন্য অপ্রয়োজনীয় ও ক্ষতিকর। কিন্তু ঘিয়ে উপস্থিত আছে ওমেগা-থ্রি ফ্যাট, যা সব বয়সীর জন্যই খুব উপকারী।
ঘি কেন খাবেন
ওজন বেড়ে যাওয়ার ভয়ে ঘি খাওয়া থেকে বিরত থাকেন অনেকেই। কিন্তু এই ওজন বেড়ে যাওয়া কিংবা অসুস্থতার সঙ্গে ঘিয়ের কোনো সম্পর্ক নেই। বরং মস্তিষ্ক থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত শরীরে একাধিক অঙ্গের সচলতা বৃদ্ধিতে ঘিয়ের ভূমিকা রয়েছে।
প্রতিদিন ঘি খেলে একদিকে যেমন ভিটামিন এ এবং ই-এর ঘাটতি দূর হয়, তেমনি অ্যান্টি-অ্যাক্সিডেন্টের মাত্রাও বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ফলে পুষ্টির ঘাটতি দূর হওয়ার পাশাপাশি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও শক্তিশালী হয়।
ঘিয়ে উপস্থিত উপকারি ফ্যাটি অ্যাসিড, বিশেষত লরিক অ্যাসিড এনার্জির ঘাটতি দূরে করে শরীরকে চাঙ্গা করে তোলে। এছাড়া নানারকম সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
নিউট্রিশনিস্টদের মতে, নার্ভের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সার্বিকভাবে ব্রেন পাওয়ারের উন্নতিতে ঘি বেশ কার্যকরী। এতে উপস্থিত ওমেগা- ৬ এবং ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড শরীর এবং মস্তিষ্ককে চাঙ্গা রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
ঘি সংরক্ষণ পদ্ধতি
বাতাস প্রবেশ করতে পারে না—এমন জারে ঘি রাখতে পারলে সবচেয়ে ভালো। এটা রান্নাঘরের কেবিনেটে অন্ধকার ও ঠাণ্ডা স্থানে রাখতে হয়। এয়ার টাইট হলে আর রেফ্রিজারেটরে রাখার দরকার নেই।
জারে এয়ার টাইট অবস্থায় ঘি কিনে থাকলে তা খোলার পর এক বছর পর্যন্ত ব্যবহার করা যাবে। এ ধরনের জারে সাধারণত কোনো একটা সময়সীমার মধ্যে ব্যবহারের সতর্কবার্তা থাকে। বোঝানো হয়, খোলার পর ওই সময়ের মধ্যে ব্যবহার করতে হবে।
বাড়িতে ঘি বানালে, সেই পাত্রে কোনো গন্ধ থাকা চলবে না। হতে হবে একদম শুকনা। দোকান থেকে কেনা ঘি অন্য কোনো পাত্রে নিলেও একই বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। ব্যবহার করতে হবে শুকনা চামচ।
Previous Story
চিজ ফুডির মোজারেলা চিজ কেন হালাল ও নিরাপদ?
Next Story
ধন্যবাদ চিজ ফুডি। ঘি সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতে পারলাম।